ছোটো গল্প
হাঁসুয়া হাতে রবিন ছুটেছে!...
দাদাকে ঘিরে রেখেছে ওরা নয়ানজুলির পটল ক্ষেতে... পাড়াশুদ্ধ সবাই দেখছে --
হাঁসুয়া হাতে রবিন ছুটেছে!
শান্ত শিষ্ট একটা নিষ্পাপ ছেলে কসাইয়ের মত উন্মাদ দেখাচ্ছিলো এক মূহূর্তে।
তবু আকাঙ্খিত ভাবেই কসাই হয়ে ওঠেনি সেদিনের রবিন। বিশ হাত দূরেই হাঁসুয়া ফেলে ওদের দু'পা জড়িয়ে ধরে বলেছিলো "আমার দাদাকে মেরোনা"।
পুকুরপাড়ে নুইয়ে পড়া কলাগাছে কোপ বসাতে বসাতে দাদার আর্ত চিৎকার শুনেছিলো সে।
ললিত বুড়োর যত গর্ব তার এই ছোটো ছেলেকে নিয়ে------
প্রশংসায় মুখ উঁচু করে বেড়ায় সর্বদা। সাত চড়েও কভু একটা বাজে কথা বলেনা রবিন। বরং ললিত বুড়োকে সবাই নিন্দে করত।
গ্রামের স্কুল ছেড়েছে-কলেজ পাশ করেছে-তবু একটা সাইকেল কিনে দেয়নি।
-আট আনা দিত ডাল-বুট"খেতে। সুযোগ পেলে সেটাও আবার বাসস্ট্যান্ডের ভিখারীকে দিয়ে আসতো রবিন।
ছোটোবেলায় হ্যারিকেন আলোর ছ্যাঁকা খেয়ে পুড়েছিল বুক ও পেটের মাঝখানের চামড়া!
অর্ধমৃত রবিন বেঁচেছিল যদিও সেদিন-ত্বকের সৌন্দর্য্য কিন্তু অবশিষ্ট ছিলোনা।
ছেলেকে অনেক বেশী বেশী খাটিয়ে নিত ললিতবুড়ো। আখের মিল -ধানকল-এমনকি রিক্সা চালিয়েও হাটে সবজি বেঁচতে আসত রবিন।
ললিতবুড়ো অবশ্য অন্য যুক্তি দেখাত-দূর্ঘটনার কোনো শারিরীক প্রতিবন্ধকতা থেকে গেলো কিনা কাজের মধ্য দিয়ে সে রবিন কে কড়ায়-গন্ডায় বুঝে নিতে চাইত।
রোগা-পাতলা গড়ন,সুশ্রী এবং চেহারার রবিন সর্বদা গেঞ্জী-জামার আড়ালে ঢেকে রাখতে চাইত কলঙ্কের মত ভয়ঙ্কর পোড়া দাগটি।
.................................এরপর পড়তে থাকুন আগামী সংখ্যায়।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন